Saturday, May 23, 2009

Accupresure --Part 01. অ্যাকিউপ্রেশার চিকিৎসা : সফলতা ও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি - ১


অ্যাকিউপ্রেশার চিকিৎসা : সফলতা ও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি

জিয়া খালেদ

অ্যাকিউপ্রেশার চিকিৎসা হচ্ছে ঔষধবিহীন, কোন প্রকার যন্ত্রপাতিবিহীন বিস্ময়কর এক প্রাকৃতিক চিকিৎসা পদ্ধতি। প্রায় পাঁচ হাজার বছর পূর্বে ভারতে মুনি হৃষিদের মাধ্যমে এর প্রসার ঘটেছিল। পরবর্তীতে আকুপাংচার নামে বিভিন্ন দেশে এর বিস্তার ঘটে। অ্যাকিউপ্রেশার হচ্ছে আকুপাংচার হতে উন্নত, সহজ, নিরাপদ, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ামুক্ত অথচ আকুপাংচারের মতই এক প্রাকৃতিক চিকিৎসা পদ্ধতি। অ্যাকিউপ্রেশার পদ্ধতিতে হাতের তালু এবং পায়ের তলা ও আশ-পাশের নির্দিষ্ট ৩৮টি বিন্দুতে চাপ দিয়ে যেকোন জটিল রোগের চিকিৎসা সম্ভব। অ্যাকিউপ্রেশার পদ্ধতিতে নিজেই নিজের চিকিৎসক, পরিবারের চিকিৎসক -- কোন যন্ত্রপাতি এবং ঔষধ ছাড়াই। অ্যাকিউপ্রেশার চিকিৎসা পদ্ধতি সফলতা এবং বৈজ্ঞানিক স্বীকৃতি দিন দিন ছড়িয়ে পড়ছে গোটা বিশ্বে।

গত ১৭ই এপ্রিল ’০৯ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে বাংলাদেশে প্রথম ২ দিন ব্যাপী ফিজিওথেরাপী বিষয়ক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে প্রকারান্তরে অ্যাকিউপ্রেশার চিকিৎসার সফলতার স্বীকৃতি দিয়েছেন ফিজিওথেরাপীর চিকিৎসকরা। তারা বলেন ”অপারেশন এবং ঔষধ ছাড়াই ম্যানুয়েল থেরাপী দিয়ে মানুষের ঘাড়, কোমর এবং মেরুদন্ডের ব্যথা নিরাময় করা সম্ভব। দূর্ঘটনা, ষ্ট্রোক সহ নানা কারণে পঙ্গুত্ব বরণকারীদের সমস্যা সমাধানও সম্ভব এ থেরাপীতে।” ফিজিওথেরাপীর চিকিৎসকরা আরোও বলেন, ”হাতের কলাকৌশল ব্যবহার করে জয়েন্টগুলোতে নাড়াচাড়া করা হয় বলেই এ চিকিৎসা পদ্ধতির নামকরণ করা হয়েছে ম্যানুয়েল থেরাপী। এটা ফিজিওথেরাপীরই অংশ।” দু’দিনব্যাপী এ সম্মেলন উদ্বোধন করেন অষ্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন ইউনিভার্সিটির মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক জুলিয়ান ওয়েব। সম্মেলনে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন।

আমার মনে হয় এখানে অ্যাকিউপ্রেশার চিকিৎসার সফলতার কথাই বলা হয়েছে। অ্যাকিউপ্রেশার চিকিৎসাও হাতের কলাকৌশল ব্যবহার করে করা হয়। ২০০৩ সাল থেকে ঢাকায় সাংবাদিক সাগর ছগীর অ্যাকিউপ্রেশার চিকিৎসা পদ্ধতি বাংলাদেশে নিয়ে আসার পর প্রথমেই নিজেই নিজের চিকিৎসা, পরিবারের চিকিৎসা এবং পরবর্তীতে প্রতিবেশীদের চিকিৎসা থেকে শুরু করে জাতীয়ভাবে পরিচিত বহু ব্যক্তিও শেষ চিকিৎসা হিসাবে অ্যাকিউপ্রেশারের মাধ্যমে বিভিন্ন জটিল রোগ থেকে মুক্তি পেয়েছেন। এদের সাক্ষাতকার ছবিসহ বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। পরবর্তীতে বাধ্য হয়ে জনাব সাগর সগীরকে ঢাকায় অ্যাকিউপ্রেশার ট্রেনিং সেন্টার খুলতে হয়। এ পর্যন্ত সারাদেশে বহু লোক ট্রেনিং নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে, পারিবারিকভাবে বিভিন্ন জটিল রোগ থেকে মুক্তি লাভ করছেন। অনেকে ট্রেনিং গ্রহন করে অ্যাকিউপ্রেশার চিকিৎসা কেন্দ্র খুলে লক্ষ লক্ষ টাকা রোজগার করছেন।

সিলেটেও ”সিলেট অ্যাকিউপ্রেশার ট্রেনিং সেন্টার” নামে একটি শাখা শাহজালাল উপশহরে চালু করা হয়েছে। ফেঞ্চুগঞ্জ প্রেস কাবের ব্যবস্হাপনায় ঢাকাস্হ বঙ্গজ স্বচিকিৎসা পরিবারের সহযোগিতায় ১ম ব্যাচে ২২জন প্রশিক্ষণার্থী অংশ গ্রহন করেন, এবং প্রশিক্ষণ নেন। গত ১৩ই ফেব্রুয়ারী ’০৯ ১ম ব্যাচের প্রশিক্ষণ কোর্স উদ্বোধন করেন সিলেট প্রেস কাবের সভাপতি জনাব মুকতাবিস-উন-নূর। উক্ত প্রশিক্ষণ সফলভাবে সমাপ্ত হয়েছে। গত ৭ই মার্চ ’০৯ তারিখ সমাপণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্হিত ছিলেন ফেঞ্চুগঞ্জ প্রেস কাবের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন ইসকা। ১ম ব্যাচের প্রশিক্ষণে অংশগ্রহন করেন মুমিনছড়া চা বাগানের মালিক মোসলেহ উদ্দিন খান, বাগানের সহকারী ম্যানেজার আব্দুল কাদির শাহিন, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের আম্বরখানা শাখার ম্যানেজার আবু তালেবও তাঁর সহধর্মিনী, মরহুম ডাঃ আব্দুল মুনিম সাহেবের ছেলে শাকিল আহমদ ও তাঁর স্ত্রী রিনা আহমদ, কলেজ শিক্ষক মতিলাল দেব, উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষীকা আয়েশা খানম, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষীকা নামিম আরা বেগম,সরকারী অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এ. কে. এম. ইকবাল আহমদ, হেলাল আহমদ, বেনু পাল সহ বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ। ২য় ব্যাচের প্রশিক্ষণ শীঘ্রই শুরু হতে যাচ্ছে।

১ম ব্যাচের প্রশিক্ষণ শেষে আমি প্রশিক্ষণ গ্রহনকারীদের সাথে একাধিকবার সভায়/ব্যক্তিগতভাবে মিলিত হয়ে এর চিকিৎসার সফলতা সর্ম্পকে জানতে চেয়েছি। সকলেই এক বাক্যে এর আর্শ্চয্যজনক সফলতা লাভ করেছেন বলে জানিয়েছেন এবং এই চিকিৎসা পদ্ধতির প্রচার ও প্রসার কামনা করেছেন। আল আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের ম্যানেজার জনাব আবু তালেব এ প্রসঙ্গে বলেন, ”অ্যাকিউপ্রেশার ট্রেনিং গ্রহনের পর এটা প্রয়োগ করে বিগত ২মাস আমাকে কোন ঔষধ কিনতে হয়নি। সত্যিই এটা ঔষধবিহীন স্বচিকিৎসা পদ্ধতি। আল্লাহ্ তার খাস রহমত স্বরূপ আমাদেরকে এ চিকিৎসা পদ্ধতি দান করেছেন।”

No comments: